গল্প বানানোর অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে যে ছেলেটা সে একদিন লেখক হবে এটা যেন খুব স্বাভাবিক। তাই বন্ধু সুমন্ত আসলামকে লেখক হিসেবে পেয়ে আমরা অবাক হইনা একটুও। কিন্তু লেখক হিসেবে অসম্ভব জনপ্রিয় এ মানুষটা যখন আজন্ম লালিত সরলতা নিয়ে এখনও আমাদের পাশে এসে বসে, হো হো করে হেসে ওঠে আমাদের সাথে গল্প-কথায় তখন অবাক হই একটু ।
আরও অবাক হই যখন দেখি এই নিভৃতচারী মানুষটা খুব নিরবে, অনেকের অলক্ষ্যে করে যাচ্ছে কিছু সামাজিক কাজ। সমাজের কাছে দায়বদ্ধতার ভার যখন আমরা অনেকেই এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচি, তখন সুহৃদ সুমন্ত কাঁধ পেতে দেয় কিছু সত্যিকারের দুঃখিমানুষের কষ্ট লাঘবের চেষ্টায়। তাই আমাদের বন্ধু হয়েও, আমাদের কাতারে থেকেও সুমন্তের স্থানহয় অসংখ্য মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায়।
লেখালেখির এক যুগ শেষে আমরা যখন খুলে বসি সুমন্তর চাওয়া-পাওয়ার হিসেবের খাতা, তখন ও মুচকি হেসেবলে, ‘কিছু অপূর্ণতা আছে হয়তো, কিন্তু প্রাপ্তিটা অনেক বেশী।’আমরা বিশ্বাস করি, লেখালেখির প্রতি ওর এই ভালোবাসা, আত্মবিশ্বাস আর তৃপ্তি ওকে অনেক অ-নে-ক দূর নিয়ে যাবে। এই বারো বছরে অনেক কিছু বদলেছে, বদলাইনি সুমন্তর সাপ্তাহিক কলাম ‘বাউন্ডুলে’ বারো বছরের অভিজ্ঞতায় উপন্যাসগুলো আরও বেশি সমৃদ্ধ। কেবল দুঃখ একটাই নাটক লেখায় আজকাল ভীষণ রকম অনুপস্থিত সুমন্ত-যেখানে ওর মেধার স্বাক্ষর ইতিমধ্যেই প্রমাণিত।
আমরা বন্ধুরা, ভীষণ ব্যস্ত এই মানুষটার অভাবে হতাশ হই মাঝেমাঝে, কখনও বা হই সমালোচনায় মুখর। সুমন্তকে ভাবায়না এসব। সুমন্ত তাঁর নিজের জগতেই বুঁদ-- অসংখ্য শব্দকে অর্থময়করে সাজানোর চেষ্টায়, নতুন লাগানো গাছটায় ফুল ফুটবার প্রতিক্ষায় কিংবা বাচ্চাদেরজন্য তৈরী করা লাইব্রেরীতে আরও কিছু নতুন বই যোগ করার চেষ্টায়।